মোঃ আশরাফুল ইসলাম, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার হাটিপাড়া ইউনিয়নের চেগারঘোনা গ্রামে রাতের আধারেই ফসলী জমি কেটে চলছে রমরমা মাটি ব্যবসা। চেগারঘোনা চকের আলী মিয়ার জমিতে ভেকু বসিয়ে মাটি কেটে মাহিন্দ্রা গাড়ি দিয়ে স্থানীয় কয়েকজন মিলে কোন প্রশাসনিক অনুমতি না নিয়েই রাতের আধারে এই অবৈধ মাটি ব্যবসা করছে। জানা যায় স্থানিয় মৃত ফৈজুদ্দিন প্রামাণিকের ছেলে লুৎফর, মৃত মনু ফকিরের ছেলে রাজা মিয়া, মহনুদ্দিনের ছেলে মকবুল, মৃত নজর আলির ছেলে মোহাম্মদ আলী, মোহন মিয়ার ছেলে নান্নু, মৃত শহর মাতব্বরের ছেলে উজ্জ্বল, মৃত ছকেল মাতব্বরের ছেলে ৫ নং ওয়ার্ড ইউ.পি সদস্য বিপ্লব হোসেন সহ আরো কয়েকজন এই মাটি ব্যবসার সাথে জড়িত।
কয়েকদিন আগে দিনের বেলাতেই চলছিলো মাটি ব্যবসা। তখন মসজিদের রাস্তা বাধার কথা বলে ১০-১২ টি মাহিন্দ্রা গাড়ি দিয়ে বাহিরে মাটি বিক্রি করার অভিযোগ উঠলে, সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমিকে বিষয়টি জানানো হলে সপ্তাহ খানেক মাটি কাটা বন্ধ রেখে ভেকু ও মাহিন্দ্রা গাড়ি সরিয়ে নিয়ে যায় মাটি ব্যবসায়ীরা ।
গত ২৫ শে মার্চ রাতে আবারও নতুন করে শুরু হয় রমরমা মাটি ব্যবসা। এবার আর দিনে নয়,রাতের আধারে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে আশেপাশের বাড়ির পুকুর ভরাট সহ পাশের গ্রামগুলোতে।
এলাকার লোকজন জানান,”রাতের আধারে মাটি কাটার কারনে প্রশাসনের কেউই এখানে আসছে না। যার ফলে তারা অবাধেই তাদের মাটি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে করে পাশের কৃষিজমি সহ এলাকার রাস্তা – ঘাটের ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া রাতে ১০-১২ টা গাড়ি চলার শব্দে বয়স্ক ব্যক্তিদের ঘুম হয় না।”
এনিয়ে তাদের বাধা দিতে গেলে তারা বলেন,” রাতের বেলায় মাটি কাটার জন্য প্রশাসন আমাদেরকে ২৫ দিনের অনুমতি দিয়েছে।
তোদের কারোর ক্ষমতা থাকলে আমাদের আটকিয়ে দেখা।”
এবিষয়ে কথা বলতে মাটি ব্যবসায়ী লুৎফর রহমানের মুঠোফোনে (01882568077) কল করা হলে সে জানান, ” মাটি কাটার জন্য আমাদের উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অনুমতি দিয়েছে। আপনি তার সাথে কথা বলুন। আমরা উপজেলা, ইউএনও,এসিল্যান্ড ও ডিসি’র কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই মাটি কাটছি।”
এবিষয়ে ব্যবসায়ী রাজা মিয়াকে তার ফোনো (01708702392) কল করা হলে তিনি বলেন,” আমরা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে কাজ করছি। আমরা মাটি বিক্রি করছি না। মসজিদের রাস্তা বাধার মাটি কাটা হচ্ছে। আপনি হাটিপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনির হোসেনের সাথে কথা বলতে পারেন।”
তার কাছে রাতের বেলাতে মাটি কাটার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন,” গাড়ি অন্য সাইডে চলে।তাই দিনের বেলায় গাড়ি না থাকার কারনে রাতের বেলায়ই কাজ করতে হচ্ছে। “
এবিষয়ে হাটিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নং ওয়ার্ড সদস্য বিপ্লব হোসেন বলেন, ” আমি মাটি কাটার সাথে জড়িত নই। আর রাতের বেলাতে মাটি কাটার বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।”
এবিষয়ে সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আঃ লতিফ তোতা বলেন, ” তার আমার কাছে এসে মসজিদের রাস্তা বাধার কথা বলেছিলো। বাহিরে মাটি বিক্রির বিষয়ে আমি অবগত না। আর আমি অনুমতি দেওয়ার কেউ না। আমি কাউকে মাটি কেটে বিক্রি করার অনুমতি দেইনি। “
এবিষয়ে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন বলেন, ” আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত না। তবে রাতের বেলা মাটি কেটে বিক্রি করার অনুমতি কাউকে দেয়া হয়নি। আমি লোক পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।”
© স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
All Right Reserve Daily Somoyer Barta © 2020.